বিনোদন

আন্তর্জাতিক নারী দিবস টাকা ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম: সুমী

শারমীন সুলতানা সুমী
শারমীন সুলতানা সুমীশারমীন সুলতানা সুমীচিরকুট ব্যান্ডের শিল্পী শারমীন সুলতানা সুমী। আনন্দ নিয়ে নিজের স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন। খুলনার খালিশপুর থেকে একদিন প্রায় শূন্য হাতে এসেছিলেন ঢাকায়। তাঁর জীবনের গল্পটি, এসেছেন, দেখেছেন আর জয় করেছেন, তেমনটা নয়। দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিতে হয়েছে তাঁকে। আজ তিনি অনেক নারীর প্রেরণা। ব্র্যান্ড ফোরাম অ্যাওয়ার্ড, অনন্যা পুরস্কারসহ পেয়েছেন নানা সম্মাননা। চিরকুট পেয়েছে চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড,আরটিভি মিউজিক অ্যাওয়ার্ড। ‘আহারে
জীবন’ গানের জন্য ভারতের ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের জন্য চিরকুট পেয়েছে তিনটি মনোনয়ন। নারী দিবস উপলক্ষে এই শিল্পীর কাছ থেকে জেনে নেওয়া যাক তাঁর সংগ্রামের গল্প।

যখন স্কুলে ছিলেন, তখন মনে হয়েছে শিল্পী হবেন বা ব্যান্ড গড়বেন?
আমাদের বাড়িতে গানের পরিবেশ ছিল। বিদ্যুৎ চলে গেলে আব্বা বলতেন, ‘সুমী, হারমোনিয়ামটা নিয়ে আয়।’ শুরু হয়ে যেত আড্ডা, গান। আব্বা নাটক করতেন। নানা বিষয় নিয়ে তাঁর পড়াশোনা ছিল। এ দেশে মেয়েরা কত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছে। আমি সারা জীবন খুব সাধারণ জীবন যাপন করেছি, এখনো করছি। মানুষ আমাকে চেনে খুব অল্প দিন হলো। আমি কখনো মাথায় রাখি না যে, কেউ আমাকে চেনে। আমার কাছে মনে হয়, সাধারণ থাকতে পারা খুব জরুরি। আবার ছেলেমেয়ে আলাদা, এই হিসাব মাথায় রেখে কাজ করি না। এই হিসেবে কখনো কারও সঙ্গে মিশিনি, কাজ করিনি। মানুষ হিসেবে কাজ করেছি। ছোটবেলায় আমার ভাই একবার বলেছিল, সবার আগে মানুষ হবি। আমার মাথায় সেটাই ছিল। তবে আমার ওপরে কোনো ঝড়ঝাপটা আসেনি, তা নয়। কিন্তু আমি সেসব পাত্তা দিইনি। সারা জীবন অভিযোগ না করার চেষ্টা করেছি। মনে হতো, সময় হোক। সময়ের জন্য অপেক্ষা করতাম। আমার কাছে সঠিক সময়টা খুব জরুরি। আমি আমার কাজটা ঠিক রাখতাম। আবার কখনো এমন হয়েছে, আমি একটা ভালো কাজ করেছি কিন্তু মূল্যায়ন পাইনি। সেটা নিয়েও কখনো অভিযোগ করিনি। কোথাও লিখে দিলাম বা কাউকে জানিয়ে দিলাম, এমন করতাম না। ধৈর্য আমার সব সময়ই ছিল।

শারমীন সুলতানা সুমী
 এই চর্চা বাড়িতেই ছিল?
বাসার সবাই এ রকম। সবচেয়ে ধৈর্যশীল ছিলেন আমার আব্বা। সবকিছুকে সহজভাবে নেওয়ার কাজ তাঁকেই সবচেয়ে বেশি করতে দেখেছি। দোষ না করেও দোষী হওয়ার ঘটনাগুলো স্বাভাবিকভাবে নিয়েছি। কেউ অন্যায় আচরণ করলে তার সঙ্গে ঠিক উল্টোটা করতাম। মনে হতো, কতক্ষণ শত্রুতা পুষে রাখবে! জীবনটা খুব ছোট। এই সময়ের মধ্যে যদি এর-ওর সঙ্গে শত্রুতা করে কাটাই, তাহলে তো হয় না। জীবনের মানে কিন্তু অনেক বড়। ঠিকমতো নিজের কাজগুলো করা জরুরি।

সমাজে মেয়েদের একটু বেশি ঝামেলায় পড়তে হয়। যাদের ধৈর্য কম, তারা কী করবে?
সমাজ মানুষই গড়ে। নিজের আত্মসম্মান ঠিক রেখে কেউ যদি কাজ করে যায়, তাহলে ঝামেলাগুলো ক্ষুদ্র হয়ে পড়ে। এ জন্য কাজের পরিসর বড় করে ফেলতে হয়। আমি জানি মেয়েদের অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, কর্মক্ষেত্রে, বিভিন্ন জায়গায়। সমস্যা যে শুধু মেয়েদের হয়, তা নয়। ছেলেদেরও হয়। নিজেকে নিরাপদ রেখে যদি সমস্যাগুলোকে উপেক্ষা করা যায়, তাহলেই হয়ে যায়। সমাজটা যেহেতু এ রকম, মেয়েদের একটু সচেতন হলে ক্ষতি কী? আমি চাইলেই কাল সমাজটা বদলে দিতে পারছি না। সময় লাগবে। তত দিন নিরাপদ থাকতে হবে। আমি কোথাও গেলে একা বাসে উঠি না। যদি জানি, অমুক জায়গায় একা গেলে বিপদে পড়তে পারি, কাউকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছি।

শারমীন সুলতানা সুমী
শারমীন সুলতানা সুমী
দুই–একটা বিপদের কথা বলেন, যেগুলো সুন্দর করে সামলাতে পেরেছিলেন?
জীবনে যখনই কোনো সমস্যা এসেছে, সেটা আমার জন্য একটা সম্ভাবনা হয়ে দেখা দিয়েছে। এই যেমন আমি এখন নিজেই গান লিখছি। ব্যান্ড করার পর কারও কাছে গান চাইলে আমাকে ঘোরাত। মেয়ে হওয়ার কারণে হয়তো ঘোরাতে ভালো লাগত তাদের। বলত, আসো চা খাই, আড্ডা দিই। তাদের সঙ্গে চা খেতে যেতে হবে! একটু ঢং করতে হবে? আমার এসব খুব অপছন্দ। মনে হলো, তাহলে নিজেই লিখি। একটা সময় সুর করার জন্য মানুষের হাত ধরতে হতো, পা ধরতে হতো। যখন দেখলাম দিতে চায় না, নিজেই চেষ্টা করলাম। ধারদেনা করে একটা গাড়ি কিনেছি। যেদিন থেকে ড্রাইভার পার্ট নেওয়া শুরু করল, আমি নিজেই চালানো শিখে নিলাম।

জীবনে তাহলে দুষ্টু লোকেরও দরকার আছে?
অবশ্যই, জীবনে দুষ্টু লোকের দরকার আছে। নয়তো শিক্ষা হবে না। কঠিন পথ কীভাবে পাড়ি দিতে হয়, জানা যাবে না।

কিন্তু ইউরোপ, আমেরিকা বা এশিয়ার অনেক দেশে মেয়েদের এটা চিন্তা করতে হয় না যে, আমাকে নিরাপদে চলাফেলা করতে হবে? সঙ্গে কাউকে নিয়ে বাসে উঠতে হবে?
হ্যাঁ, সেখানে সোসাইটি ও রকম। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ এখন অনেক লিবারেল। আমাদের দেশের জন্ম বেশি দিন হয়নি। যেসব দেশের কথা বলছেন, তাদের বয়স অনেক, তাদের কালচার অনেক পুরোনো আর ওভাবেই গড়ে উঠেছে। আজ বাংলাদেশ সবকিছুতে লিবারেল হচ্ছে। পঞ্চাশ এক শ বছর পর আমদের অবস্থাও ওরকম হয়ে যাবে। আর যেটুকু খারাপের কথা বলছেন, ওটা সব দেশেই আছে। দিল্লিতে ধর্ষণ কম হয়? সেখানকার লোকেরাই বলে, ভাই, একা একা ওদিকে যেয়ো না। পশ্চিমা দেশগুলোতেও হয়। যেমন ট্রাফিক জ্যাম। আমি নিউইয়র্ক শহরেও জ্যাম দেখেছি, অবিশ্বাস্য।শারমীন সুলতানা সুমীশারমীন সুলতানা সুমী

নারী দিবসে কোনো অনুষ্ঠানে গান করছেন?
করছি, তবে সেটা নারী দিবসের অনুষ্ঠান না। আমি সেটা চাইনি। আমি নারী হিসেবে কখনো কোনো বাড়তি সুবিধা পেতে চাইনি। সব সময় চেয়েছি, সবাই আমাকে মানুষ হিসেবে দেখুক। যেখানে ছেলেদের ব্যান্ড যেতে পারবে, সেখানে আমাদের ব্যান্ডও যেতে পারবে। আমরা কম টাকায় শো করি না। অনেকে সম্মানী কমানোর জন্য অনুরোধ করে। আমরা নিজেদের একটা স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণ করেছি। শো করলে তো লাভ, তবু ছাড় দিই না। বাংলাদেশের শিল্পীদের কোনো রয়্যালিটি নেই। অনুষ্ঠানের সম্মানীও যদি কম নিতে হয়, তাহলে তাদের চলবে কীভাবে?

আপনার একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা আছে। ক্যারিয়ারের শুরুটা ছোট্ট করে বলবেন?
বিজ্ঞাপনী সংস্থায় চাকরি দিয়ে আমার ক্যারিয়ারের শুরু। গ্রেতে ছিল আমার প্রথম চাকরি। দীর্ঘদিন সেখানে কাজ করেছি। অ্যাডকমে কাজ করেছি। বিবিসিতে কনসালট্যান্ট ছিলাম। সেই সাহস থেকেই ‘সল্ট ক্রিয়েটিভ’ নামে একটা কোম্পানি খুলেছি, অফিস নিয়েছি। দেখি কোনো ব্যাকআপ ছাড়া আমি পারি কি না। আমি মেয়েদের সব সময় বোঝাতে চাই, কোনো কিছুই অসম্ভব না। বিয়ে শেষ সমাধান নয়। আমার মা একটা সময় পর্যন্ত বলতেন, বিয়ে করে ফেল, বিয়ে করে ফেল। এখন অবশ্য বলেন না। আচ্ছা, বিয়ের পর কী হবে, সেটা আমরা জানি? আমাদের অফিসে যারা কাজ করছে, তারা আমার ছেলেমেয়ের মতো। আমি বিশ্বসংসারে বিশ্বাসী। নিজের জন্য আমি পরিস্থিতি তৈরি করে নিয়েছি। পরিস্থিতি কখনোই অনুকূলে থাকে না। কাজ, যোগ্যতা আর আত্মবিশ্বাস দিয়ে সেটা বানিয়ে নিতে হয়।

সেটা তারকা শারমীন সুলতানা সুমী পেরেছেন। সাধারণ সুমীরা পারবে?
সুমী তারকা হয়েছে দুদিন হলো। সব সুমী পারবে, যদি তারা নিজের কাজ ঠিক রাখে, পড়াশোনা করে, নিজের পায়ে দাঁড়ায়। নিজের কাজের গণ্ডি বাড়ানো এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া জরুরি। আমি কিন্তু কখনোই বাসা থেকে টাকা নিয়ে পড়িনি। বান্ধবীর কাছ থেকে টাকা ধার করে জেদ করে একা এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। আমার পরিবারের কেউ কখনোই খুলনার বাইরে আসেনি। খুঁজে খুঁজে পায়ে হেঁটে টিউশনি করতাম তিন-চারটা। পার্টটাইম জব করেছি, বাণিজ্যমেলায় চা বিক্রি করেছি। জিনিসগুলো এত সোজা না। আমি সব সময় মর্যাদার সঙ্গে কাজ করতাম। কোনো কাজকেই ছোট মনে করিনি। মেয়েদের আশপাশে নানা রকম ছেলে থাকে, নানা রকম চেষ্টা করে। আমার ব্যক্তিত্বটাই এমন ছিল যে, ওই ধরনের কথা বা কাজের সাহস পেত না কেউ।শারমীন সুলতানা সুমীশারমীন সুলতানা সুমী

এত কিছু করে গান করলেন কীভাবে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন একটা সাংস্কৃতিক সংগঠন করতাম। গানটা আমার জন্য ছিল শ্বাস নেওয়ার একটা জায়গা। যে কঠোর পরিশ্রম আমি করতাম, গান আমার সব ক্লান্তি ভাসিয়ে নিয়ে যেত। সব সময় মনে করতাম, আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে গান। গানটাই আমার বেঁচে থাকার জ্বালানি। আমি ভবিষ্যৎ দেখতে পেতাম। মনে হতো গান করতে গেলে এর-ওর কাছে যেতে হবে। তাহলে কী করা যায়? পরিবারের মতো একটা দল করে ফেলি। এক এক করে একসঙ্গে হলাম, আমি হলাম তাদের পরামর্শক। সব সময় বলতাম, আমাদের ইগো বাদ দিতে হবে, বিনয়ী থাকতে হবে, কাজের প্রতি মনোযোগী হতে হবে।

আপনার ‘আহারে জীবন’ গানটাকে অনেকে বাংলার দুঃখী মেয়েদের জীবনসংগীত মনে করতে শুরু করেছে। আপনার জীবনসংগ্রামের নির্যাস আছে এই গানে?
সংগ্রাম না থাকলে মানুষের জীবনে উত্তরণ আসে না। আমার জীবনে সংগ্রাম ছিল, এখনো আছে। আমি যে গানই লিখি, ‘আহারে জীবন’, ‘কানামাছি’, ‘না বুঝি দুনিয়া’, এগুলো আমার অভিজ্ঞতার নির্যাস। খুব ভালো লাগে যখন আমার স্কুল-কলেজের বান্ধবীরা, যাদের অনেকগুলো সন্তান হয়ে গেছে, তাদের অনেকে বলে, ‘তোকে দেখে আমরা সাহস পাই। আমরা খুব ভালো নেই।’ আমাকে দেখে যদি কেউ সাহস পায়, এটা আমার জন্য বড় প্রাপ্তি।

বিয়ে করতে চান?
বিয়ে করেছিলাম। অনেক দিন হলো বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছি। জীবনে যা ঘটুক, আমি মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। যে জীবনটা ছিল, সেটা সুন্দর ছিল। সেটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, মেনে নিয়ে এগিয়ে গেছি। এখন আমার কাজের জায়গাটা অনেক বড়। আমার অনেক কিছু করার আছে। সব সময় মাথায় রাখি, জীবন একটাই। সেই জীবনটা রেঁধে-বেড়ে-খেয়ে শেষ করে ফেললে হয় না। অনেক সম্ভাবনার জীবন আমাদের। সৃষ্টিকর্তা আমাদের ভেতর কিছু জিনিস দিয়ে পাঠিয়েছেন, কেন আমরা আরও দশটা মানুষকে অনুপ্রাণিত করব না। আমার এখানে যারা কাজ করে, সবাই নতুন। তাদের আমি কাজ শেখাচ্ছি। চাইলে অভিজ্ঞ কর্মী নিতে পারতাম। কিন্তু সব সময় নতুনদের শক্তিশালী করতে ভালো লাগে।শারমীন সুলতানা সুমীশারমীন সুলতানা সুমী

নারী ব্যান্ড লিডার হিসেবে আজ এই অবস্থানে পৌঁছাতে সমস্যা হয়নি?
অবশ্যই হয়েছে। কিন্তু সমস্যাকে কখনো পাত্তা দিইনি। তবে আমার ব্যান্ড মেম্বাররা যদি আমাকে সাপোর্ট না দিত, সেটা এতটা সহজ হতো না। আমি একা কোনো দিন কিছু করতে পারতাম না। বিশেষভাবে আমি বলব পাভেল আর ইমনের কথা। ওরা আমার সঙ্গে যেভাবে ছিল, অনেক বড় সাপোর্ট। এখন নীরব অসম্ভব সাপোর্ট দেয়, দিদারও ছিল সব সময়। ওরা সব সময় আমাকে বোঝে, আগলে রাখে। সেটা না করলে হয়তো আমি আজ এখানে আসতে পারতাম না। তারপর আমার ভাই, আগের অফিসের সহকর্মীদের সাপোর্ট। ১০ জনের মধ্যে ২ জন কিন্তু নেগেটিভ আচরণ করতেই পারে। ১০ জনের উৎসাহের কথা না বলে যদি ২ জনের আচরণের কথা মনে রাখি, তাহলে হবে না। আমার ব্যান্ড মেম্বারদের নানাভাবে এটা-ওটা বোঝানো হতো। একটা মেয়ের সঙ্গে ব্যান্ড করছ…আমি সব সময় আমার ব্যান্ড মেম্বারদের বলি, ফোকাসড। কেউ কিছু বললে যদি ভেঙে পড়ি, তাহলে হবে না। মন খারাপ হবে। কিন্তু নিজেকে এমন জায়গায় নিতে হবে, মন খারাপ হলে হেসে ‍উড়িয়ে দিতে পারবে।
শারমীন সুলতানা সুমী
 রবীন্দ্রনাথ যে মারের সাগর পাড়ি দিতে বলেছেন, আপনারা সেটা কীভাবে দিচ্ছেন?
নিজের ভেতরে একটা বড় আকাশ তৈরি করে নিতে হয়। তাহলে ইচ্ছেমতো বিচরণ করা যায়। একটা বিশাল আকাশে একটা ছোট বিমান উড়ে গেলে সেটাকে আলাদা কিছু মনে হয় না। সেই আকাশে রোদ ওঠাতে হয়, মেঘ জমলে সরিয়ে দিতে হবে। সিম্পল। বড় ছবিটা দেখতে জানতে হয়। মানুষ হিসেবে আমার যে কী করার ক্ষমতা আছে, সেটা যদি কেউ বুঝতে পারে, তাহলে দুঃখ-রাগ-ক্ষোভ-অভিমান ছোট হয়ে যায়। আমি আসলে অনেক শক্ত হয়ে গেছি।শারমীন সুলতানা সুমীশারমীন সুলতানা সুমী

তরুণেরা দেখার সেই চোখ কীভাবে তৈরি করবে?
যে যা পারে, সেটা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। আমার কাছে অনেক প্রস্তাব আসে—অভিনয়ের, উপস্থাপনার। আমি কখনোই এসব করার কথা ভাবিনি। আমার লক্ষ্য ঠিক ছিল সব সময়, আমি গান করব। এত কিছু করে আমার বিখ্যাত হওয়ার দরকার নেই। বিজ্ঞাপনের বাজারে আমার ভালো ভালো কাজ আছে, অনেকে জানেও না। সেসব নিয়ে কখনো কাউকে বলিনি, বড়াই করিনি। আমাদের গানগুলো কিন্তু আমার লেখা হিসেবে মানুষ জানে না। সবাই জানে, গানগুলো চিরকুটের। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। অনেকেই খোঁচাখুঁচি করতে চেষ্টা করবে, আত্মবিশ্বাস ভাঙতে চাইবে। বোঝাতে চাইবে যে, তুমি আসলে কিছু না, তোমাকে দিয়ে হবে না। তাতে কী? ক্ষমাশীল হতে হবে। ক্ষুদ্রতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যদি কারও ক্ষতি করার চিন্তা করা হয়, শেষ। যদি শত্রুর বন্ধু হয়ে যাওয়া যায়, তাহলে একসময় সে-ই লজ্জা পাবে।

জনপ্রতিনিধি হলে কী করবেন?
আমার আগ্রহ নেই। যদি বদলাতে হয়, গানে গানেই আমি পৃথিবী বদলাব। শিশুদের নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে। প্ল্যান করছি।

No comments:

Post a Comment